sunnah24

আগে অর্ডার নিয়ে পরে অন্যত্র থেকে পণ্য ক্রয় করে বিক্রি করে উপার্জন করা কি হালাল?

প্রশ্ন

 

প্রশ্ন-আমরা কয়েকজন মিলে একটা কাজ করি। কাজটা হল-কেউ যদি বালি কিনে পুকুর ভরাট করার জন্য বা অন্য কোন কাজ করার জন্য তাহলে সে আমাদের কাছে এসে বলে। অথবা আমরা তার কাছে গিয়ে বলি: “আপনার বালির ফালানোর কাজটা আমাদের মাধ্যমে করাবেন?”

 

যদি সে রাজি হয় তাহলে তার কাছ থেকে নির্দিষ্ট একটা রেটে চুক্তি করি। এবং আসল বিক্রেতা আর্থৎ বালির ড্রেজারের মালিকের সাথে তার থেকে কিছু কম রেটে ঠিক করি।

 

ধরেন ক্রেতার কাছ থেকে প্রতি ফুট বালি ৬ টাকা করে ঠিক করে বিক্রেতার কাছে ৪ টাকা দিয়ে বাকি যে ২ টাকা থাকে সেই টাকাটা লাভ হিসেবে রেখে দেই।

 

ক্রেতা জানতে পারেনা আমরা বিক্রেতাকে কয় টাকা দিয়েছি আর বিক্রেতাও জানতে পারেনা আমরা ক্রেতার থেকে কয় টাকা নিয়েছি।

 

অথবা ক্রেতা বিক্রেতা জানাজানিও হয়ে যায়।

 

আমাদের ক্রেতাকে মাঝে মাঝে মিথ্যা কথা বলতে হয় হাতে রাখার জন্য। ধরেন আমরা বলি ২ দিন পরে আপনার মাল পরবো, কিন্তু আমরা জানি ২ দিনে পারবো না। হাতে রাখার জন্য এই কথা বলতে হয়। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা ওয়াদা দিয়ে রাখতে পারি না।

 

ধরেন আমরা ক্রেতার কাছ থেকে বানা টাকা নেওয়ার সময় বলি ২ দিন পরে আপনার বালি পরবে কিন্তু দেখা জায় ৮/১০ দিন লেগে যায় তাতে মাঝে মাঝে ক্রেতা অসন্তুষ্টও হয়। এখন প্রশ্ন হল-

 

(ক) লাভের যে টাকাটা আসে তা কি হালাল হবে?

 

(খ) যে কাজটাতে এরকম মিথ্যা কথা বলা হহয় ওয়াদা ভংগ করা হয় ক্রেতা অসন্তুষ্ট হয় সে কাজটার লাভ্যংশ কি হারাম হয়ে যাবে?

 

(গ) ক্রেতার কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিতে কি কোন সমস্যা আছে?

 

উত্তর

 

بسم الله الرحمن الرحيم

 

উপরোক্ত পদ্ধতিতে ব্যবসা করে উপার্জন করা জায়েজ আছে। কিন্তু মিথ্যা কথা বলা জায়েজ নেই। তাই যতদিনে পারবেন বলে প্রবল ধারণা হয়, ততোদিনের কথাই বলবেন। পরে যদি দেরী হয়, তাহলে ক্রেতার কাছ থেকে সময় চেয়ে নিবেন।

 

কিন্তু জেনেশুনে মিথ্যা বলা জায়েজ নেই। বাকি এসব কারণে ব্যবসার উপার্জনের টাকা হারাম হবে না। কিন্তু মিথ্যা বলার গোনাহ হবে।

 

আর অগ্রিম টাকা নিতেও কোন সমস্যা নেই।

 

 

 

لَّعْنَتَ اللَّهِ عَلَى الْكَاذِبِينَ [٣:٦١

 

তাদের প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত করি যারা মিথ্যাবাদী। {সূর আলেইমরান-৬১}

 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا

 

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

 

إنما جاز الاستصناع فيما للناس فيه تعامل، إذا بين وصفا على وجه يحصل التعريف (الفتاوى الهندية-3/207، جديد-3/195)

 

أما صورة الاصتصناع فهى أن يقول إنسان لصانع من خفاف أو صفار أو غيرهما: إعمل لى خفا، أو آنية من أديم، أو نحاس من عندك بثمن كذا، ويبين نوع ما يعمل، وقدره، وصفته، فيقول الصانع: نعم (بدائع الصنائع، زكريا-4/93، كرتاشى-5/2)

 

أما شرائط جوازه: فيمنها: بيان جنس المصنوع، ونوعه، وقدره، وصفته، لأنه لا يصير معلوما بدونه (بدائع الصنائع، زكريا-4/94)

 

أما الاستصناع: فللإجماع الثابت بالتعامل من لدن النبى صلى الله عليه وسلم إلى يومنا هذا، وهو من أقوى الحجج (تبيين الحقائق، زكريا-4/526، امدادية ملتان-4/123)

 

صح الاستصناع بيعا لاعدة على الصحيح (رد المحتار، زكريا-7/475، كرتاشى-5/224)

 

اختلف المشئخ فيه، فقال بعضهم: هو مواعدة وليس ببيع، وقال بعضهم: هو بيع لكن للمشترى فيه خيار، وهو الصحيح (الموسوعة الفقهية الكويتية-3/326)

 

والله اعلم بالصواب

 

উত্তর লিখনে

 

✍️ উত্তর লিখনে-

মুফতি লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

-প্রধান মুফতি জামি’আতুস সুন্নাহ ঢাকা

 

তত্ত্বাবধানে-

 

★ মুফতি আ ফ ম আকরাম হুসাইন হাফিজাহুল্লাহ

প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক,

জামি’আতুস সুন্নাহ ঢাকা

 

★ মুফতি মাসূম রেজা হা

ফিজাহুল্লাহ

মুশরিফ, ফতোয়া বিভাগ,

জামি’আতুস সুন্নাহ ঢাকা

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *