sunnah24

বিষয়ঃ বিধর্মীদের বাড়িতে খাওয়া প্রসঙ্গে

প্রশ্নঃ

‘আসসালামু আলাকুম। হযরত,আমার একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু আছে। সে খ্রিষ্টান। তার সাথে আমার খুবই ভাল সম্পর্ক। তার বাবা মার সাথেও আমার কথা-বার্তা হয়। আমার বন্ধু এবং আন্টি আঙ্কেল প্রায়ই ওনাদের বাসায় যেতে বলেন। আমি বিভিন্ন অযুহাতে এড়িয়ে যাচ্ছি। কিন্তু সামনে এমন সিচুয়েশন আসছে যে আমি না করার কোনো পথ খুঁজে পাব না।

এমতাবস্থায়,আমার করণীয় কী? বন্ধুর বাসায় গেলে খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে কী হুকুম?

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

অমুসলিমদের সাথে আন্তরিক বন্ধুত্ব যদ্বারা নিজের দ্বীনের চেয়ে অমুসলিমের দ্বীনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিংবা স্বীয় দ্বীনের উপর অমুসলিমের কথাকে প্রাধান্য দেয়ার মত আবেগ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, এককথায় আন্তরিক ও গভীর সম্পর্ক স্থাপন কোন মুসলমানের জন্য অমুসলিমের সাথে জায়েজ নয়।

তাই আপনার সতর্ক হওয়া উচিত।

বাকি সামাজিকতা রক্ষা করা জরুরী। স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখা জায়েজ আছে। সেই সাথে যদি বিধর্মী প্রতিবেশি হয়, তাহলে প্রতিবেশির সকল হক বিধর্মীও প্রাপ্য। তাকে হাদিয়া দেয়া ও খোঁজ খবর নেয়া ইসলামের বিধান।

বিধর্মীদের বাড়িতে হালাল খাদ্য খাওয়া জায়েজ আছে। তবে না খাওয়াই উত্তম।

দলীলসমূহ

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارَىٰ أَوْلِيَاءَ ۘ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ ۚ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ [٥:٥١

হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ জালেমদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না। {সূরা মায়েদা-৫১}

إِنَّمَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ قَاتَلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَأَخْرَجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ وَظَاهَرُوا عَلَىٰ إِخْرَاجِكُمْ أَنْ تَوَلَّوْهُمْ ۚ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ [٦٠:٩

আল্লাহ কেবল তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন, যারা ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেছে এবং বহিস্কারকার্যে সহায়তা করেছে। যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে তারাই জালেম। {সূরা মুমতাহিনা-৮}

عَنْ مُجَاهِدٍ، أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَمْرٍو ذُبِحَتْ لَهُ شَاةٌ فِي أَهْلِهِ، فَلَمَّا جَاءَ قَالَ: أَهْدَيْتُمْ لِجَارِنَا اليَهُودِيِّ؟ أَهْدَيْتُمْ لِجَارِنَا اليَهُودِيِّ؟ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: مَا زَالَ جِبْرِيلُ يُوصِينِي بِالجَارِ حَتَّى ظَنَنْتُ أَنَّهُ سَيُوَرِّثُهُ

মুজাহিদ (রহঃ) হতে বর্ণিত আছে, আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ)-এর জন্য তার পরিবারে একটি ছাগল যবেহ করা হল। তিনি এসে বললেন, তোমরা কি আমাদের ইয়াহুদী প্রতিবেশীকে (গোশত) উপহার পাঠিয়েছ? আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ প্রতিবেশীর অধিকার প্রসঙ্গে জিবরীল (আঃ) আমাকে অবিরত উপদেশ দিতে থাকেন। এমনকি আমার ধারণা হল যে, হয়ত শীঘ্রই প্রতিবেশীকে উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিবে। [সুনানে তিরমিজী-২/১৬, হাদীস নং-১৯৪৩, সুনানে আবূ দাউদ-২/৭০১, হাদীস নং-৫১৫২]

الا ان تتقوا منهم تقاة فحينئذ تجوز الموالات ظاهرا (روح المعانى، سورة آل عمران تحت رقم الآية-37-3\228، احكام القرآن للجصاص-2\12)

وَفِي التَّفَارِيقِ لَا بَأْسَ بِأَنْ يُضِيفَ كَافِرًا لِقَرَابَةٍ أَوْ لِحَاجَةٍ كَذَا فِي التُّمُرْتَاشِيِّ، وَلَا بَأْسَ بِالذَّهَابِ إلَى ضِيَافَةِ أَهْلِ الذِّمَّةِ هَكَذَا ذَكَرَ مُحَمَّدٌ رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى (الفتاوى الهندية، كتاب الكراهية، الباب الرابع فى اهل الذمة-5/347)

وما يأتى به المجوس فى نيروزهم من الأطعمة إلى الأكابر والسادات من كانت بينهم وبينهم معرفة ذهاب ومجى فقد إن اخذ ذلك على وجه الموافقة لفرحهم يضر ذلك لدينه، وإن أخذه لا على ذلك الوجه لا بأس به والاحتراز عنه أولى (الفتاوى التاتارخانية-7\348، رقم-10657، المحيط البرهانى-7\429، رقم-9289)

والله اعلم بالصواب

✍️ উত্তর লিখনে-

মুফতি লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

-প্রধান মুফতি জামি’আতুস সুন্নাহ ঢাকা

তত্ত্বাবধানে-

★ মুফতি আ ফ ম আকরাম হুসাইন হাফিজাহুল্লাহ

প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক,

জামি’আতুস সুন্নাহ ঢাকা

★ মুফতি মাসূম রেজা হাফিজাহু

ল্লাহ

মুশরিফ, ফতোয়া বিভাগ,

জামি’আতুস সুন্নাহ ঢাকা

 খাওয়ার হুকুম কী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *