মুফতি আ ফ ম আকরাম হুসাইন
এক. দুর্নীতিমুক্ত ইফা চাই, কেন?
রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশের ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো গ্রহণ করে থাকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন৷ রোযা-ঈদের চাঁদ সহ সারা বছর চাঁদ দেখা, ইমাম প্রশিক্ষণ, মকতব শিক্ষা, আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতার প্রার্থী নির্বাচন, মসজিদভিত্তিক পাঠাগারসহ দীনি-বইপত্র প্রকাশনার নানা আয়োজন আছে ইফায়৷ এই ইফাকে দুর্নীতিমুক্ত করে এখানে যোগ্য ও ন্যয়পরায়ণ ব্যক্তি বসানো সময়ের বড় প্রয়োজন৷ আপনারা জেনে থাকবেন, বাংলাদেশের চার লাখ মসজিদের ইমাম-খতীব ও মুয়াজ্জিন-খাদেমগণ নানাভাবে বৈষম্যের শিকার৷ সরকারি বাজেটে ইমামদের কোনো বরাদ্দ নেই৷ কওমী মাদরাসার তাকমীলের সনদ সরকারী স্বীকৃত৷ মাস্টার্স সমমান হওয়ার পরও কোনো ক্ষেত্রে এই সনদধারীরা সরকারি চাকুরি বা এম ফিল ডক্টরেট করার আবেদন করতে পারে না৷ এগুলো ফাঁকফোকড়। ইফাকে তার সঠিক লক্ষ্যে চলতে দিলে ধর্মীয় অঙ্গন বৈষম্যমুক্ত হতে পারে। হক্কানী রব্বানী আলেমদের বিশাল কর্মক্ষেত্রের সুযোগ করা যেতে পারে ইফার বিভিন্ন পদ-পদবীতে। আগস্ট বিপ্লবের পর দেশের আদালত-বিচারালয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিসির পদ থেকে পদত্যাগ শুরু হয়েছে৷ রাষ্ট্রের নানা কিছু সংস্কার শুর হচ্ছে এবং হবে৷ ধর্মীয় অঙ্গনও দুনীতিমুক্ত হোক৷ ইফা হোক দুর্নীতিমুক্ত৷ অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্মীয় উপদেষ্টা মাওলানা ডক্টর আ ফ ম খালিদ হোসেন একজন সুলেখক৷ সুবক্তা৷ মুফাক্কির-চিন্তক৷ সমন্বয় চিন্তা লালন করেন৷ ভাবেন উম্মাহর ঐক্য নিয়ে৷ আশাকরি, তিনি বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দিবেন।
দুই. ইফার পদে ঢাবির গোল্ড মেডেলিস্ট প্রফেসর ড. মুফতি মুহাম্মদ গোলাম রাব্বানী স্যারকে দেখতে চাই। কেন?
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাবি শিক্ষকদের প্রথম মিছিলে প্রথম সারিত ছিলেন অধ্যাপক মুফতি ড. মুহাম্মদ গোলাম রব্বানী৷ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উর্দু বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান৷ বর্তমানে তিনি এই বিভাগে অধ্যাপক৷ তিনি সৎ, প্রতিভাবান আলেম৷ ইসলামী শিক্ষা ও আধুনিক শিক্ষার সমন্বিত এক ব্যক্তিত্ব৷ তিনি টিভি আলোচকও৷ তার সংক্ষিপ্ত পরিচয় নিম্নরূপ-
• অধ্যাপক, উর্দু বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (গ্রেড-২)
• সম্পাদক, ঢাকা ইউনিভার্সিটি জার্নাল অব উর্দু
• *সাবেক শিক্ষক, জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর, ঢাকা
• *সাবেক সহযোগী সম্পাদক, মাসিক আদর্শ নারী সাবেক সহযোগী সম্পাদক, মাসিক রাহমানী পয়গাম
• *চেয়ারম্যান, সাহিত্য ও গবেষণা কেন্দ্র
• *আজীবন সদস্য, এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশ
• শিক্ষাজীবন • দাওরায়ে হাদীস, জামিয়া রাহমানিয়া, মোহাম্মদপুর, ঢাকা
• ইফতা, জামিয়া রাহমানিয়া, মোহাম্মদপুর,
• ঢাকা বিএ (অনার্স) এবং এমএ (উর্দু), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
• এম.ফিল ও পিএইচ.ডি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
• এমএ (আরবী), দারুল উলূম নাদওয়াতুল উলামা, লক্ষ্ণৌ, ভারত
• [শিক্ষায় গোল্ড মেডেল রয়েছে ] উল্লেখ করার মতো এমন বহু যোগ্যতার অধিকারী তিনি।
এমন বহুমুখী প্রতিভাবান, গুণী একজন যোগ্য ব্যক্তিত্বকে যদি ইফার মহাপরিচালক নিয়োগ করা হয় তাহলে ইফা প্রাণ ফিরে পাবে আশা করি৷ • কওমী অঙ্গনের প্রতি… আপনি হয়তো ভাবছেন, শুধু এই নামটিই প্রস্তাব করা হলো কেন? খ্যাতিমান আরো কত আলেমই তো দেশে আছেন? তাদের জবাবে বলি, ইফা ডিজির পদটি সরকারী একটি পদ। এ পদের জন্য সরকারী চাকুরী বিধি অনুযায়ী ‘গ্রেড-২’ এর যোগ্যতা সম্পন্ন হতে হবে। এমন যোগ্য আমাদের কওমী অঙ্গনের খুব বেশী আলেম পাওয়া যাবে না। আশাকরি, বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন, জাযাকুমুল্লাহ।
লেখক: মহাসচিব, জাতীয় ইমাম পরিষদ বাংলাদেশ