জনগণের ওপর দমন-পীড়ন, অধিকার লুণ্ঠন এবং ক্ষমতার অপব্যবহার কোনো ন্যায়পরায়ণ শাসকের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। ন্যায়পরায়ণতা এবং জনগণের প্রতি আন্তরিক শাসন পরিচালনা করাই তাদের প্রধান কর্তব্য ও বৈশিষ্ট্য। সরকার যদি নাগরিক অধিকার বাস্তবায়নে শতভাগ চেষ্টা করে তাহলে জনগণের ভালোবাসা ও আস্থা অর্জন করতে পারবে। পাশাপাশি দেশ সমৃদ্ধ হবে এবং জনগণ স্বস্তিবোধ করবে, অন্যথায় শাসক যখন অত্যাচারী ও জুলুমপ্রিয় হবে তখন দেশে অস্থিরতা ও অশান্তির পরিবেশ তৈরি হবে।
এ বিষয়টি নবী করিম (সা.) একটি উদাহরণের মাধ্যমে বুঝিয়েছেন। হাসান (রহ.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জনৈক সাহাবি আয়েজ ইবনে আমর (রা.) একবার উবাইদুল্লাহ ইবনে জিয়াদের কাছে গেলেন। তখন তিনি তাঁকে লক্ষ্য করে বললেন, বৎস! আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি ‘নিকৃষ্টতম রাখাল হচ্ছে অত্যাচারী শাসক।’ তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে সাবধান থাকবে।
তখন সে বলল, বসে পড়ো! তুমি হচ্ছো নবী (সা.)-এর সাহাবিদের উচ্ছিষ্টের ন্যায়। জবাবে তিনি বলেন, তাঁদের মধ্যেও কি উচ্ছিষ্ট রয়েছে? উচ্ছিষ্ট তো তাদের পরবর্তীদের এবং অন্যদের মধ্যে। (মুসলিম, হাদিস : ৪৬২৭)
নবীজি (সা.) এর উক্তি ‘নিকৃষ্টতম রাখাল হচ্ছে অত্যাচারী শাসক।’ এর ব্যাখ্যায় হাদিসবিশারদরা বলেন, এ হাদিসটি ওই অত্যাচারী শাসকের ব্যাপারে বর্ণিত হয়েছে—যে তার প্রজাদের শাসন ও তত্ত্বাবধানে কোনো সহানুভূতি প্রকাশ না করে, বরং তাদেরকে নিত্যদিনের ভোগান্তিতে নিষ্পেষিত করে।
নিজের ক্ষমতা আটকে রাখতে বিভিন্ন মিথ্যা কৌশল ও নির্যাতনে তাদের কোণঠাসা করে রাখে। তাই নবী (সা.) এই বর্ণনায় তাদের অত্যাচারকে ধ্বংসাত্মক কাজের সঙ্গে তুলনা করেছেন। (আল মিনহাজ : ৫/৫৪৯)