ঢাকার প্রতিনিধি দলের সিনিয়র সদস্য মাওলানা রুহুল আমিন (সাইমুম সাদী) লিখেছেন,
আমরা যখন কচুয়ার রহিমা নগর মাদ্রাসায় ঢুকলাম ছাত্রদের চোখেমুখে ভীতির ছাপ লক্ষ করলাম। যখন বললাম, আমরা তোমাদেরকে দেখতে এসেছি নিস্পাপ চেহারার কুরআনের এই শিশুদের চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরতে লাগলো নি:শব্দে। উপস্থিত সবাই আবেগাপ্লুত হয়ে গেলাম ।
তাদের চোখের সম্মুখে তাদের উস্তাদকে কিছু গুন্ডাপান্ডা মেরে রক্তাক্ত করেছে, এইভয়াবহ দৃশ্য সম্ভবত সারাজীবন তারা বয়ে বেড়াবে বুকের গভীরে।
সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং পরিকল্পিতভাবে একটা মাদ্রাসা ভাঙচুর এবং একজন হাফেজে কুরআনের শিক্ষকের গায়ে হাত তুলেছে কতিপয় সন্ত্রাসী। মেরে আহত করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে এখন এই নিরপরাধ কুরআনের শিক্ষক বিনা দোষে জেলে আছেন।
সেদিন উপস্থিত বেশ ক’জন শিক্ষক ও ছাত্রদের সাথে কথা বলে জানলাম তারা বারবার অনুরোধ করেছেন সিসিটিভি ফুটেজ চেক করার জন্য কিন্তু পাষণ্ডদের মন গলেনি। অদ্ভুত ব্যাপার হলো দুজন হিন্দু ধর্মের লোক দেবজিত এবং শুভজিত এই মারামারিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন, মাদ্রাসায় জুতো পরে ঢুকে ওই হাফেজে কুরআনকে নির্যাতন করেছেন। আমরা যেকোনো রকম সাম্প্রদায়িক কাজের বিরোধী কিন্তু এই কাজটাকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন আশাকরি হিন্দু ভাইয়েরাই সিদ্ধান্ত নেবেন।
মাদ্রাসায় ছাত্র শিক্ষকদের সান্ত্বনা দিয়ে হাফেজ ওমর ফারুক, যাকে নির্যাতন করে জেলে দেওয়া হয়েছে তার বাড়িতে যখন যাই, রাত তখন ন টা। গ্রামে ন টা মানে গভীর রাত। ওমর ফারুকের পিতা এবং ছোটভাই বেরিয়ে এলেন ভেতর থেকে। ছোট ভাই নিজেও একজন হাফেজে কুরআন। বাবা বয়োবৃদ্ধ। ওমর ফারুক এখনো বিয়ে করেনি।
বাবা জানালেন, নিজেদের ঘর নেই, ওমর ফারুকের মামাদের পক্ষ থেকে একটা ঘর বানিয়ে দেওয়া হয়েছে অস্থায়ী ভিত্তিতে। বৃদ্ধ কেদে ফেললেন ঝরঝর করে। বললেন, আমি মনে করেছিলাম আমাদের আল্লাহ ছাড়া কেউ নেই। আপনাদেরকে দেখে মনে হলো আমাদেরও খোজ নেওয়ার কেউ আছে।
ক্বারি নাজমুল হাসান সাহেবের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই মাদ্রাসায় কিছুটা অনুদান দেওয়া হয়েছে। এখানেও ওমর ফারুকের ফ্যামিলির জন্য সবাই সামান্য হাদিয়া প্রদান করে বেরিয়ে আসি। বলাবাহুল্য ওমর ফারুক এবং উস্তাদুল হুফফাজ আবদুল হক সাহেব একই গ্রামের।
এখন জরুরি ভিত্তিতে হাফেজ ওমর ফারুককে জেল থেকে বের করা জরুরি। আইনগত ব্যাপারে অন্যদের পাশাপাশি সাজুলিয়া দরবারের একজন ইয়াং পীর সাহেব ও তার লোকজন যথেষ্ট কাজ করছেন। পাশাপাশি কচুয়া থানার ওসি সাহেবের ভুমিকা সন্তোষজনক বলেও জানা গেছে।
আমি এই ঘটনাকে ফোকাসে নিয়ে আসতে চাই। মেইনস্ট্রিম মিডিয়া ইচ্ছে করেই মিথ্যা রিপোর্ট প্রচার করেছে। তাই হাজার হাজার পোস্ট এবং শেয়ার চাই যে, বলাৎকারের ঘটনা মিথ্যা এবং সাজানো। আমাদের বেফাক, হাইয়া এবং হেফাজতে ইসলাম ও অন্যান্য দল থেকে প্রতিবাদ, অন্তত বিবৃতি ভিক্ষা চাচ্ছি।
কেনো চাচ্ছি? শতকরা আশি ভাগ বলাৎকারের অভিযোগ মিথ্যা হয়ে থাকে। কচুয়ার ওই মাদ্রাসায় যদি সিসিটিভি ফুটেজ না থাকত তাহলে ওই একটি ঘটনা দিয়ে কওমি অংগন তছনছ করার প্ল্যান ছিল।
ঘটনার আদ্যোপান্ত এখন কিছুটা বুঝতে পারছেন তো ভাইজান ?
Leave a Reply